হজ কার্যক্রম উদ্বোধন: দেশবাসীর জন্য দোয়া চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
চেম্বার ডেস্ক:: এবারের হজ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে হজযাত্রীদের কাছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য দোয়া চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শুক্রবার (৩ জুন) হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং হজ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দোয়া চান তিনি। আশকোনার হজ ক্যাম্পে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন-গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
হজযাত্রীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমাদের দেশে যেভাবে আমরা অর্থনৈতিক উন্নতি করতে পারছি, এই উন্নয়নের পথে যেন আমরা এগিয়ে যেতে পারি। এই বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ, তারা যেন তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার সুযোগ পায়, উন্নত জীবন পায়, সুন্দর জীবন পায়, তার জন্য আপনারা দেশবাসীর জন্য দোয়া করবেন।
করোনাভাইরাসের মতো মহামারির হাত থেকে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব যেন মুক্তি পায়, তার জন্যও আল্লাহর কাছে দোয়া করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আপনারা আমাদের দেশের মানুষের জন্য দোয়া করবেন। আর এই করোনাভাইরাস, এ রকম কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে যেন বিশ্ব রক্ষা পায়, মানবজাতি রক্ষা পায়, আর সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণ ও বাংলাদেশ যেন রক্ষা পায়, সেই দোয়া করবেন।
সৌদি আরবে অবস্থানকালে দেশটির আইন মেনে চলার অনুরোধ রেখে সরকারপ্রধান বলেন, আমি বলব, যারা যাবেন হজে, অবশ্যই সৌদি আরবের যে সমস্ত নিয়মকানুন এবং আইন, সেটা সবাইকে মেনে চলতে হবে। হজে সব আইন মেনে সবাই চলবেন, এটাই আমরা আশা করি। নিজের ইবাদত-বন্দেগি করা, আবার দেশের মানসম্মানও রক্ষা করা—এটা সবার কর্তব্য। সেই কথাটা আপনারা মাথায় রাখবেন।
হজযাত্রীদের সতর্ক থেকে নিজেদের সুস্থ রাখার আহ্বানও ছিল বঙ্গবন্ধুকন্যার কণ্ঠে। তিনি বলেন, আর তা ছাড়া আপনারা নিজেরা নিজেদের সুস্থ রাখার চেষ্টা করবেন, যাতে সবাই সুস্থ থাকতে পারেন, সুস্থ থেকে আল্লাহর দরবারে দোয়া করতে পারেন। এটাই আপনাদের কাছে আমার আহ্বান থাকবে, বাংলাদেশের জন্য দোয়া করবেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা করোনাভাইরাসের মতো এ রকম অতিমারির হাত থেকে যেন এ দেশ রক্ষা পায়, বিশ্ব রক্ষা পায়, কিন্তু সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশের জন্য, বিশেষ করে আপনারা দেশের মানুষের জন্য দোয়া করবেন, সেটা চাই।
হজ ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু করতে হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে বলেও হজযাত্রীদের জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, হজযাত্রীরা যাতে কোনো রকমের হয়রানি ছাড়া হজে যেতে পারেন, হজ পালন করতে পারেন, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।
আর এই ব্যবস্থাপনা নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এখানে অনেক ব্যবস্থা আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে করেছে। কারণ ১৯৮৪ সালে আমি প্রথম ওমরাহ পালন করি। পঁচাশি সালে সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে আমি হজ পালন করতে যাই। সে সময় আমি অনেক অব্যবস্থাপনা দেখেছি।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ ই-হজ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যার ফলে পূর্বে যেমন হাজিদের কষ্ট হতো, এখন আর হয় না। সেই কষ্টটা আমরা দূর করতে পেরেছি। আমি মনে করি এটা আমাদের কর্তব্য। যারা পবিত্র হজ পালন করতে যাচ্ছেন, অবশ্যই তারা যেন সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারেন, ইবাদত-বন্দেগি করতে পারেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।