সিলেটের অসহায় দুর্গত মানুষের পাশে সরকার নেই : কাইয়ুম চৌধুরী
চেম্বার ডেস্ক::
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, সিলেটে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে অসহায় দুর্গত মানুষের পাশে সরকার নেই। ত্রাণ বিতরণের নামে বন্যা দুর্গত মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে । সরকারের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কেবল লোক দেখানো নামে কিছু কিছু জায়গায় সাহায্য করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকার বন্যা দুর্গত মানুষ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না। তাই অবিলম্বে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে সিলেটের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তিনি বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কাইয়ুম চৌধুরী আরো বলেন, বন্যায় সিলেটের ১০৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬০টি প্লাবিত হয়েছে। ৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। পানিবন্দি মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ সে তুলনায় সহযোগিতা করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, গতকাল (বুধবার) সরকারের দুজন মন্ত্রী সিলেটে এসে ফটোসেশন করে গেছেন। দু’একটি জায়গা ঘুরে কিছু মানুষের হাতে ত্রাণ তুলে দিয়েই চলে গেছেন। এই কার্যক্রমে দায় সাড়া যাবে না। প্রতিটি এলাকার মানুষের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বন্যা নিয়ে রাজনীতি না করে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো খুবই জরুরি। আগে মানুষ বাঁচুক পরে রাজনীতি হবে।
কাইয়ুম চৌধুরী আরও বলেন, এবারের বন্যা ২০০৪ সালের বন্যার চেয়েও ভয়াবহ। কিন্তু সেসময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। সিলেটের কৃতি সন্তান এম সাইফুর রহমান দ্রুত ছুটে আসেন বন্যা দুর্গতদের পাশে। সিলেটের মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেন। সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে যে সহযোগিতা করা হয়েছিল, সেগুলো দিয়েই মানুষ সংকট কাটিয়ে ওঠতে পেরেছে। কিন্তু এখন ত্রাণ বিতরণের নামে বন্যা দুর্গত মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। কিন্তু বন্যা দুর্গত অসহায় মানুষের পাশে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা নেই। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। অবাক হওয়ার মত তথ্য-সিলেটের মানুষ এখন কত অসহায়। অথচ এই কথাটা বলার কেউ নেই। বলার সুযোগ নেই। আমরা অতীতের মত এখনও মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। সরকারকেও অবিলম্বে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান তিনি। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গোয়াইনঘাট, জেন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান এ বিএনপি নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে কাইয়ুম চৌধুরী আরও বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় শুধু এখন ত্রাণ বিতরণ করলে হবে না। বন্যার পানি নেমে গেলেও অন্তত ছয় মাস সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকারিভাবে যে ত্রাণ দেওযা হবে তা যেন দলীয়ভাবে লুটপাট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি ঋণ মওকুফ করতে হবে ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাড়াতে আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি বিনা সুদে ঋণ বিতরণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক কমটির সদস্য ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক কমটির সদস্য ইশতিয়াক চৌধুরী, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহীন আহমদ প্রমুখ।