কানাইঘাটে পানিবন্দী মানুষের পাশে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান শাকির

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাটে যখন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে ঠিক সেই মুহুর্তে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পানিবন্দী অনাহারে অর্ধাহারে থাকা মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে ছুটে চলছেন কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকির।
গত দুই দিন থেকে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বানবাসী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি তাদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে কোথাও নৌকা নিয়ে কোথাও আবার অথৈ বন্যার পানিতে নেমে কাঁধে ত্রাণের বস্তা নিয়ে ছুটছেন ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ শাকির। একজন জনপ্রতিনিধি এমন মহানুভব দৃষ্টান্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার প্রশংসা করছেন সবাই। যখন ভয়াবহ বন্যা বিরাজ করছে তখন বানবাসী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই, সেই মুহুর্তে উপজেলার পৌরসভা, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি, সদর ইউপি, বড়চতুল ইউপির প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানিবন্দী মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চাল, চিড়া, মুরি, মোমবাতি, দিয়াশলাই, খাবার স্যালাইন ইত্যাদি ত্রাণ সামগ্রী তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে কয়েক’শ পরিবারের মধ্যে ইতিমধ্যে বিতরণ করেছেন। ধারাবাহিক ভাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের বিশেষ করে হাওর অঞ্চলে অতি দুর্যোগপূর্ন এলাকায় বসবাসরত যাদের বাড়ি-ঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে সেইসব পরিবারের মধ্যে অনুরূপভাবে ত্রাণ সামগ্রী ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ শাকির বিতরণ করবেন বলে জানা গেছে।
ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কালে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন বড়চতুল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হোসেন চতুলী, মাওলানা আসাদ আহমদ, মাওলানা হারিছ আহমদ, মাওলানা জুনায়েদ শামসী, মাওলানা মিজান নুরী, হাফিজ মারুফ প্রমুখ।
কানাইঘাট উপজেলার সাবির্ক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কানাইঘাটের এবারের ভয়াবহ বন্যা ২০০৪ সালের বন্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। গোটা উপজেলার ৯৫ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এই মুহুর্তে হাজার হাজার মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যারা বসবাস করছেন তারা খাবার কিনতে পারছেন না, যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারনে। সরকারি ভাবে যে ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা বিতরণ করা হচ্ছে কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলের পানিবন্দী মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। যার কারনে মানুষের এ করুণ অবস্থা দেখে আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে কয়েক লক্ষ টাকার চাল সহ শুকনো খাবার কিনে সেগুলো হাওর এলাকা দিয়ে নৌকা নিয়ে পানিবন্দী পরিবারের মধ্যে বিতরণ করছি। ত্রাণ বিতরণকালে মানুষের কষ্ট, দুঃখ-দুর্দশা দেখেছি যা চোখে পানি এসে গেছে। অনেকে ঘরের চালের উপর ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে অবস্থান করছেন। তাদের কাছে কোন খাবার নেই, বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকায় তারা অন্ধকারে আছেন। প্রত্যন্ত এলাকায় গেলে কানাইঘাটের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে সেটি অনেকে অনুমান করতে পারবেন। আমি আমার সাধ্যানুযায়ী বন্যা চলাকালীন সময়ে মানুষের পাশে থাকব। এমতাবস্থায় পানিবন্দী হাজার হাজার মানুষের পাশে দাড়াঁনোর জন্য তিনি সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন, বিদেশী দাতা গোষ্টী, প্রবাসী ভাইদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।