আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও সুদহার নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
চেম্বার ডেস্ক::
ব্যাংকের মতো এবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও ঋণ-আমানতের সুদহার নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে আমানত নিতে পারবে এবং ঋণ দিতে পারবে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ সুদে। আগামী জুলাই মাস থেকে তা কার্যকর হবে। ব্যাংকের আমানত ও ঋণে সুদ হার ৬ শতাংশ ও ৯ শতাংশ হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য তা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে জুলাই থেকে নতুন ও পুরোনো সব আমানত ও ঋণে নতুন সুদ হার কার্যকর হবে। তবে আগে বেশি সুদে নেওয়া আমানত মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর নতুন করে রাখা হলে তখন নতুন সুদ কার্যকর হবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদ হার নির্ধারণের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়ার পর তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে নতুন ও পুরোনো সব ধরনের ঋণের সুদের হার হয় ৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে মেয়াদি আমানতের সুদহার গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম না হওয়ার শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার দাঁড়ায় প্রায় ৬ শতাংশ।
তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সুদহার নির্ধারণ করে দেওয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তারা সুদ হার বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের জালিয়াতির কারণে আর্থিক খাতের চারটি প্রতিষ্ঠান সংকটে পড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে খারাপ অবস্থায় আছে। এ কারণে তারা বেশি সুদে টাকা ধার করছে, সেই টাকা আবার বেশি সুদে ঋণ দিচ্ছে। পাশাপাশি কিছু ভালো প্রতিষ্ঠানও ঋণের বিপরীতে বেশি সুদ নিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তা ৩০ শতাংশও ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই সুদহার বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের সুদহার কমানোর জন্য আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণের সুদ আদায় করে। দেশে এখন ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে।