সর্বশেষ

» বিদেশে পাঠানোর কথা বলে মৌলভীবাজারের নারীকে ঢাকায় নিয়ে ধর্ষণ

প্রকাশিত: ১৬. এপ্রিল. ২০২২ | শনিবার

চেম্বার ডেস্ক:: সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে ভাষা শেখানোর নামে মৌলভীবাজার থেকে এক নারীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে ধর্ষণ করা অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মানব পাচার চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ধর্ষণের শিকার নারী মুঠোফোনে র‌্যাবের সহায়তা চান। অভিযোগ পেয়ে গত বুধবার রাতে ঢাকার রামপুরা থেকে ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন তোফায়েল আহম্মেদ, কামরুল আহম্মেদ, খালেদ মাসুদ হেলাল এবং মো. জামাল।

র‌্যাব-৩–এর অধিনায়ক বলেন, তোফায়েল আহম্মেদ ও ভুক্তভোগী নারীর বাড়ি একই এলাকায়। তিনি ওই নারীকে সৌদি আরবে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি ওই নারীকে বলেন, সৌদি আরবে যেতে হলে আরবি ভাষা শিখতে ঢাকায় যেতে হবে। পরে মৌলভীবাজার থেকে ঢাকার রামপুরায় চক্রের আরেক সদস্য কামরুল আহম্মেদের বাসায় এনে তোফায়েল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তোফায়েলসহ ওই চারজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

চক্রটি সম্পর্কে র‌্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রেপ্তার চারজন সংঘবদ্ধ মানব পাচার ও প্রতারক চক্রের সদস্য। গ্রেপ্তার কামরুল এই চক্রের প্রধান। অন্য তিনজন তাঁর সহযোগী। তাঁদের জনশক্তি রপ্তানির কোনো অনুমোদন নেই। কাজের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ ভিসায় নারীদের মধ্যপ্রাচ্যে পাঠাচ্ছেন। তাঁরা বিদেশ গিয়ে কাজ পাচ্ছেন না। অনেকেই সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কখনো আবার ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভুয়া পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিট প্রদান করছেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা। এভাবে পাঁচ বছরে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চক্রের সদস্যরা।

চক্রের সদস্যরা ঘন ঘন ঠিকানা পরিবর্তন করেন বলেও জানান র‌্যাব-৩–এর কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ভুয়া ভিসা ও টিকিট নিয়ে বিমানবন্দরে গিয়ে অনেক বিদেশগামী বুঝতে পারেন তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। তখন চক্রের সদস্যদের কাছে প্রতিকার চাইলে যোগাযোগ বন্ধ করে ঠিকানা পরিবর্তন করেন। এভাবে গত দুই বছরে আটবার ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন চক্রের সদস্যরা।

চক্রের প্রধান কামরুল ইসলাম সম্পর্কে র‌্যাব জানায়, কামরুল নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তাঁর কোনো নির্দিষ্ট পেশা নেই। প্রতারণা ও মানব পাচারই তাঁর পেশা। ২০১৯ সালে তিনি ভ্রমণ ভিসায় দুবাই যান। সেখানে মানব পাচারের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে দুবাইয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পান।

তিনি ২০২১ সালের মে মাসে দেশে ফিরে আসেন। তাঁর জনশক্তি রপ্তানির লাইসেন্স নেই। বিভিন্ন ট্যুরস ও ট্রাভেলসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভ্রমণ ভিসায় বিভিন্ন দেশে লোক পাঠান। তাঁর অন্যতম সহযোগী জামাল মাহবুব ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সহকারী ব্যবস্থাপক। জামাল সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।

গ্রেপ্তার হওয়া খালেদ প্রায় ১৫ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। ২০১৬ সালে দেশে ফিরে মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েন।

তোফায়েল নামের গ্রেপ্তার হওয়া অপরজন পেশায় গাড়িচালক। কয়েক বছর ধরে তিনি কামরুলের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন।

-প্রথম আলো

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

October 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031