পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ
চেম্বার ডেস্ক::পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বড় ভাই ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা ৭০ বছর বয়সী শেহবাজ শরিফ দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। সোমবার পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ থেকে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতারা গণপদত্যাগ করায় বিরোধী সংসদ সদস্যদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, পাকিস্তানের ২৩ তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরিফ। পিটিআইয়ের সদস্যরা ভোট বর্জন করায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে ১৭৪ জন আইনপ্রণেতা তার পক্ষে ভোট দেন।
এর আগে, পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা ওয়াক আউট করে সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে যান। ওই সময় পিটিআই-সমর্থিত প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী শাহ মাহমুদ কুরেশি ঘোষণা দেন, তার দলের আইনপ্রণেতারা জাতীয় পরিষদ থেকে গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংসদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বিবেকের তাড়নায় ভোট আয়োজন করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেওয়ার পর পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে ভোট হয়। এতে বিরোধীদের ১৭৪ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেহবাজ শরিফ।
এর আগে, শনিবার দিনভর নানা নাটকীয়তা এবং মধ্যরাতে সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। দেশটির ৩৪২ সদস্যের সংসদের ১৭৪ জনই ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।
অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের সাত দশকের কোনো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারার ইতিহাসের অংশ হয়েছেন সাবেক এ ক্রিকেট তারকা। পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। তবে এ প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল তা খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।
সেদিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। টানা পাঁচ দিন শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট ৭ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেন এবং অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট আয়োজনের নির্দেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মেনে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারের সভাপতিত্বে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অধিবেশন শুরু হয়। দিনভর চলে নাটকীয়তা। কয়েক দফায় অধিবেশন স্থগিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারবেন না জানিয়ে রাতে পদত্যাগ করেন জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার। পরে স্পিকারের আসনে বসেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সদস্য আয়াজ সাদিক। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভোটে হেরে যান ইমরান খান।