আন্দু নদীর শাপলা বিল:কানাইঘাটের নতুন পর্যটন সম্ভাবনা

ফখরুল ইসলাম:: বিস্তীর্ণ বিলে ফুটে আছে লাল, সাদা আর নীল শাপলা। বর্ণিল শাপলার সৌন্দর্যে উপভোগে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আন্দু নদীর শাপলা বিলকে ঘিরে দরখা দিয়েছে পর্যটন সম্ভাবনা।

ঘন সবুজ বন আর বিলের মাঝে প্রতিদিন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত এক অপরুপ দৃশ্যের অবতারণা হয় এখানে। মনে হয় প্রকৃতি তার হৃদয়ে জমানো সব সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে। শাপলার সৌন্দর্যে উপভোগ করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন বিলের জলের শাপলার সঙ্গে। প্রাকৃতির অপরুপ লাবণ্যে ঘেরা এই আন্দু লেক পর্যটন শিল্পে এনে দিতে পারে অপার সম্ভাবনা।

স্থানীয় ভাবে এটিকে আন্দু গাঙ্গ বা পুরাতন সুরমা বলে অভিহিত করা হয়। সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলাদ্বীন ১নং লক্ষীপ্রসাদ ইউপি ও ৩নং দিঘীরপার পূর্ব ইউপি এবং ৪নং সাতঁবাক ইউপি মিলে এই লেকটির অবস্থান। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার এ অন্যতম দর্শনীয় স্থানটিতে যেমন উপভোগ করা যায় প্রাকৃতির মোহনীয় দৃশ্য। আর অন্যদিকে লেকের মাঝে ছড়িয়ে থাকা সচ্ছ পানির সমারোহ। এ লেকে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম বলে এখানে নানা প্রজাতির পাখির নির্বিঘ্নে বিচরণ চোখে পড়ার মত। লেকটি ১৯৪৭ সালের পূর্বে এটি সুরমা নদী ছিলো। প্রায় ৬ কিলোমিটার লেকটি যেখানে শুরু হয়েছিল তার এক কিলোমিটার বিপরীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। বৃটিশ সরকার এই এলাকাকে নদীভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং নদীর গতিপথ সোজা করার জন্য লেকটির দু’পাশে মাটি ভরাট করে সুরমা নদী থেকে এ অংশ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এরপর এ অংশের নাম হয় পুরাতন সুরমা বা আন্দু গাঙ্গ।

কানাইঘাটে অবস্থিত এই লেকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক লেকের পানি সব মৌসুমে সচ্ছ থাকে। লেকের ধারে গড়ে উঠেছে দ্বীপের মতো ছোট ছোট দুটি চর। সিলেট-জকিগঞ্জ রোডের জুলাই নামক স্থান থেকে লেক পর্যন্ত একটা সচ্ছ পানির খাল রয়েছে। লেকের চার পাশে ছোট ছোট গ্রাম আছে। শীত মৌসুমে অনেক প্রকার দেশীয় অতিথি পাখির দেখা মেলে এই লেকে।

যাতায়াত: সিলেট থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে সিলেট জকিগঞ্জ রোডের বাংলা বাজার নামক স্থানে নেমে জনপ্রতি ১০টাকা ভাড়ায় সিএনজি অটোরিকশা করে ভবানিগঞ্জ বাজার যেতে হবে, ভবানিগঞ্জ বাজারের পাশেই অন্দু লেক। অথবা সিলেট জকিগঞ্জ রোডে সড়কের বাজার নেমে ১০টাকা ভাড়ায় লেগুনা বা সিএনজি অটোরিকশা ধরে লন্তির মাটি স্ট্যান্ডে যেতে হবে, স্ট্যান্ডের পাশেই আন্দু লেক। যোগাযোগ ব্যবস্থা তুলনামূলক এখানে অনেক ভালো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুন্সী আবুল হোসেন বলেন, আন্দু নদীর শাপলার বিল পর্যটনের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। শাপলা বিলকে আরও আকর্ষণীয় পর্যটন বান্ধব করা যেতে পারে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

দর্শনার্থী মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, শাপলার বিল ঘিরে বৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। সরকার একটু সুদৃষ্টি দিলে এখানে অবকাঠামোগত কিছু সুবিধা এবং সড়কপথের সংস্কার হলে দর্শনার্থী অনেক বাড়বে। এতে প্রত্যন্ত এই বিলাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।