সর্বশেষ

» সিলেটে আতঙ্কের নাম ছাত্রলীগ ‘টিলাগড়’ গ্রুপ

প্রকাশিত: ২৮. অক্টোবর. ২০১৭ | শনিবার

ফখরুল ইসলাম: সিলেট-তামাবিল রোডের প্রাণকেন্দ্র ‘টিলাগড়’ এখন আতংকের জনপদে পরিনত হয়েছে। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে টিলাগড়ে ঘটছে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড। আওয়ামী লীগের দু’ই নেতার মধ্যে শক্তি বৃদ্ধির দ্বন্দ্বে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটছে বলে দাবি পুলিশ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের।এ দুই নেতার একজন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সিটি কাউন্সির আজাদুর রহমান আজাদ। আর অন্যজন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রঞ্জিত সরকার। দুজনই ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ছাত্র রাজনীতি করেছেন একসাথে। এম.সি ও সরকারি কলেজ কেন্দ্রিক ছাত্রলীগের টিলাগড় ইউনিট তাদের ইশারায় চলে।
জানা গেছে, এমসি কলেজ, সরকারি কলেজ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অবস্থান পাশাপাশি। ফলে এখানে নিজেদের বলয় বাড়ানোর পাশাপাশি আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া ছাত্রলীগ।
আজাদ ও রঞ্জিত অনুসারীরা দীর্ঘদিন থেকে দুগ্রুপে বিভক্ত। এই দু’গ্রুপের মধ্যেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে দীর্ঘদিন ধরে।
গত দুই মাসের মধ্যে টিলাগড়কেন্দ্রীক ছাত্রলীগের গ্রুপিং রাজনীতির বলি হতে হয়েছে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর নগরীর শিবগঞ্জ এলাকায় প্রতিপক্ষ গ্রুপের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী জাকারিয়া মোহাম্মদ মাসুম। পূর্ব বিরোধের জের ধরে মাসুমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। নিহত মাসুম সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শান্তিগঞ্জের মাসুক মিয়ার ছেলে। তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সমর্থিত সুরমা গ্রুপের কর্মী ছিলেন। হামলাকারীরা আজাদ গ্রুপের কর্মী ছিলেন বলে শুরু থেকেই অভিযোগ ছিল মাসুমের সহপাঠীদের। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত
১৬ অক্টোবর আজাদ গ্রুপের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে খুন হন রঞ্জিত গ্রুপের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মী ওমর মিয়াদ। নিহত মিয়াদ সিলেট এমসি কলেজে বিএসএস এবং লিডিং ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এই হত্যাকণ্ডের পর রায়হান চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে শাহপরাণ থানায় মামলা করা হলেও পুলিশ এখন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে দুই গ্রুপের কোন্দলে খুন হন এমসি কলেজের গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা উদয়েন্দু সিংহ পলাশ। এরপর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠে টিলাগড়ের ছাত্রলীগ। এমসি কলেজের হল পোড়ানো, হল ভাঙচুর, অস্ত্রবাজি, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এছাড়া ২০১২ সালের ৮ জুলাই রাতে শিবির তাড়ানোর নামে মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসের ৩টি ব্লকের ৪২টি কক্ষ পুড়িয়ে দেয় ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগ কর্মীদের অভিযোগ, সংঘর্ষে খুনের ঘটনায় মামলা হলেও দোষীদের আইনের আওতায় আনতে দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি দেখা যায় না। ফলে বারবার রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে সিলেটের টিলাগড়।এদিকে,আজাদ-রঞ্জিত দু’জনের বাসাও টিলাগড়ে। হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে কাউকে পাওয়া যায়নি বাসায়।

এ বিষয়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘টিলাগড়ের ঘটনা নিয়ে আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় আছি। এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

February 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728