উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দিবে না আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

চেম্বার ডেস্ক:: 

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যোগ দিলেন আরও চার শিক্ষার্থী। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা মানবশিকলও তৈরি করেছেন।

 

রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা ঘোষণা দেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে।

তারা আরও বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে কেবল পুলিশ ছাড়া আর কেউ ঢুকতে পারবে না। ভবিষ্যতে তারা বাসভবনের জরুরি পরিষেবা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। তবে এখন ওই ভবনের জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে।

 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখা শিক্ষার্থী নাফিজা আনজুম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেব। এ সময় পুলিশ ছাড়া আর কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অবরুদ্ধ করছি, বিষয়টি ঠিক এমন নয়; আমরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেব না। আমরা এখানে বসে অনশন করছি, আর সবাই গিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করবেন, সেটা হয় না। এ কারণে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন কর্মসূচির ১০০ ঘণ্টা পূর্ণ হয়েছে আজ সন্ধ্যায়। এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আন্দোলনরত ১৬ জন শিক্ষার্থী। অনশনের ১০০ ঘণ্টা পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

 

গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও সামনে আসে আন্দোলনে।

 

পরে ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

 

১৯ জানুয়ারি বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করে ২৩ জন শিক্ষার্থী। একই দাবিতে পরদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকশো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেন। অনশনে অসুস্থ ১৬ শিক্ষার্থী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়া বাকিদের স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।