সর্বশেষ

» শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ আ.লীগের

প্রকাশিত: ১৮. জানুয়ারি. ২০২২ | মঙ্গলবার

চেম্বার ডেস্ক:: শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

তারা শিক্ষার্থীদের সবগুলো দাবি যৌক্তিক উল্লেখ করে তা পূরণে কিছুটা সময় দেয়ার আহ্বান জানান।

একই সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যাতে সমাধানে পৌঁছা যায় সেই পথ খোলা রাখারও আহ্বান জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে মঙ্গলবার দুপুরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরদের বিক্ষোভ স্থলে হাজির হন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক বিধান কুমার সাহাসহ আরও অনেকে।

এ সময় শফিউল আলম নাদেল বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশে আমি আজকে ঢাকা থেকে এসেছি। আমাদের দল ও সরকার আপনাদের পাশে আছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে এই সংকট থেকে বের হয়ে আসার একটি পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।’

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের দাবির প্রতি একমত। আপনাদের প্রাথমিক দাবিগুলো যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন হয় সে চেষ্টা করব। তবে আমাদের একটু সময় দিতে হবে। যাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ফিরে আসে সে চেষ্টা চালব।

‘তবে আমি শুধু আজকে এটুকু বলতে চাই, আমরা আপনাদের পাশে আছি, পাশে থাকব। আপনাদের আন্দোলনে যাতে কোনো সুযোগ সন্ধানী গোষ্ঠী ঢুকে না পড়ে সে ব্যাপারে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে।’

মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা জাকির হোসেন বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে ক্যাম্পাস থেকে এরই মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশসহ সাঁজোয়া যান সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আপনারা যাতে সন্তোষজনক সমাধান পান আমরা সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ বা অবরুদ্ধ রাখার জন্য নয়। এখানে শিক্ষার পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

আওয়ামী লীগে নেতাদের বক্তব্যের পর নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সাব্বির হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। তিনি আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছেন। তার ক্যাম্পাসে থাকার কোনো অধিকার নাই। উনি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

আওয়ামী লীগ নেতারা পৌনে ২টার দিকে সভাস্থল ছেড়ে চলে যান। এর পর পরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভনের সামনে অবস্থান নেন। তারা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন।

উপাচার্য ফরিদ আহমেদ তার বাসভবনে অবস্থান করছেন।

এর আগে, রোববার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের পর রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশনা দেন তিনি।

তবে এদিন সকাল থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা।

উপচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের হল ছেড়ে যেতে প্রশাসন চাপ দিচ্ছে।

সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে অবস্থান করলে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে না বলেও হল প্রভোস্টের পক্ষ বলা হয়েছে এমন অভিযোগ করে লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র মোসাদ্দেক মিম বলেন, ‘এই উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। প্রক্টর, ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার সামনেই আমাদের মারধর করেছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন, ক্যাম্পাসে বোমা মারার নির্দেশ দেন তাদের হাতে আমাদের ক্যাম্পাস নিরাপদ নয়। তাদের কাছে ক্যাম্পাস ফেলে রেখে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যেতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থেই আমরা ক্যাম্পাস ছাড়ব না। বরং উপাচার্যসহ তার সঙ্গীদের ক্যাম্পাস ছাড়তে হবে।’

অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব বলেন, ‘প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে রাতে ক্যাম্পাসে থাকলে আমাদের নিরাপত্তার দায় তারা নেবেন না। তারা তো দিনেই আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারেননি। বরং পুলিশ দিয়ে আমাদের পিটিয়ে আহত করেছেন। ফলে তাদের কাছে আমরা নিরাপত্তা চাই না। বরং তাদের পদত্যাগ চাই।’

উপাচার্যের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশকেও ওই এলাকায় অবস্থান নিতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টে কারও গাফিলতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031