শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে ‘না’, উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি
চেম্বার ডেস্ক:: অনির্দিষ্টকালের জন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আবাসিক হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দফায় দফায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পুলিশি হামলা ও ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার পর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেন।
ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার পর রোববার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করে তিনটি আবাসিক ছাত্র হলের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ সকাল আটটার পর থেকে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে হল ছাড়তে দেখা গেছে। সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের সামনে ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থীকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এ সময় তাঁরা হল ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে পুলিশি হামলার ঘটনায় উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন তাঁরা। সকাল সোয়া নয়টার দিকে ওই শিক্ষার্থীরা হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের ভেতরের বিভিন্ন রাস্তায় স্লোগান দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে ওই মিছিলের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও জড়ো হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুপুর ১২টার মধ্যে তিনটি ছাত্র হল ও দুটি ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে। জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই গতকাল রাত নয়টার দিকে বিক্ষোভ জানিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করেন তিনটি ছাত্র হলের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। পরে রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থী উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশেই পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার দায় নিয়ে উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ চলে।
আজ সকাল নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত। শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে হল ছাড়ছেন।’
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। গত শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রীদের কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৬ জানুয়ারি) চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে বিকেলের পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ক্যাম্পাস।