সর্বশেষ

» বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৮. নভেম্বর. ২০২১ | রবিবার

চেম্বার ডেস্ক:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্থিতিশীল পরিবেশের কারণে দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের উদার নীতির কারণে গুরুত্ব বাড়ছে বাংলাদেশের। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা এসডিজি প্রেমেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি।

আজ রবিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২১ বাংলাদেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে পর্যায়ক্রমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা জাতীয় শিল্পনীতিসহ খাতওয়ারি শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করেছি। প্রতিটি প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। রফতানিমুখী শিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য বড় ব্যবস্থাপনাকে অটোমেশন করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ৩৯টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করেছি। মীরসরাই, সোনাগাজী ও সীতাকুণ্ড উপজেলায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরী’ গড়ে তুলছি। আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।

দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন, ২০১৫’ প্রণয়ন করেছি এবং সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি। বর্তমানে ৭৯টি পিপিপি প্রকল্পে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৬ প্রণয়ন করেছি এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি। ২০১৯ সাল থেকে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে ৩৫টি সংস্থার ১৫৪টি বিনিয়োগ সেবা অনলাইনে প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অর্থনৈতিক কূটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছি। দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি, মুক্তবাণিজ্য চুক্তি এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে কাজ করছি। ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর করেছি। বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৮টি দেশে একতরফা শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পাচ্ছে। ৩৬টি দেশের সঙ্গে দ্বৈত করারোপন পরিহার চুক্তি বলবৎ আছে। আমরা বিভিন্ন বাণিজ্য জোটের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আমরা বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে অবকাঠামোসহ সব নীতিগত সহায়তা প্রদানে অঙ্গিকারাবদ্ধ।

 

তিনি বলেন, দেশে ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের ১২ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনবল সৃষ্টির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের আইটি পণ্য রফতানির লক্ষ্য নিয়েছি। মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ করেছি। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সমাপ্তির পথে। ঢাকায় মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, সৈয়দপুরে আঞ্চলিক বিমানবন্দর, কল্পবাজারে আরও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল এবং মাতারবাড়ি ও পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, করোনা মহামারির প্রতিঘাত নিরসনে এক লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছি। আমরা স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। আমাদের অর্থনীতির আকার এখন ৪১১ বিলিয়ন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার বিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৫৫৪ ডলার। রূপকল্প -২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন করছি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ভারত, সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের দুই হাজার ৩৩২ জন অংশগ্রহণকারী নিবন্ধন করেছেন জেনে আনন্দিত হয়েছি। বিনিয়োগের জন্য আমরা সম্ভাবনাময় ১১টি খাত চিহ্নিত করেছি। যেমন- অবকাঠামো, পুঁজিবাজার ও ফাইন্যান্সিয়াল সেবা, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেক্ট্রনিকস, চামড়া, স্বয়ংক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ এবং ব্লু – ইকোনমি।

 

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে এসব খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিশ্বে বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি হবে এবং বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে। মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মাহেন্দ্রক্ষণে এই বিনিয়োগ সম্মেলনটি আয়োজন করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031