সিলেটে “বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন চিন্তা ও ২০২১ সালের বাংলাদেশ” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
চেম্বার ডেস্ক::
সিলেটে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সিলেট জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত “বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন চিন্তা ও ২০২১ সালের বাংলাদেশ” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি ২৭ নভেম্বর সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় কবি নজরুল অডিটোরিয়াম সম্পন্ন হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। আরো উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. সৈকত আরা হোসেন, সিলেট জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনা করলেও তারা উন্নয়ন সম্পর্কে কোনাে আলোচলা করেন না। তাতে আমাদের উন্নয়ন কাজ ধীরেধীরে হচ্চে। বাংলাদেশে দরিদ্র সীমার মানুষ এখনো অনেক রয়েছে এই দরিদ্রতা অব্যাহত থাকলে আমাদের দেশে উন্নয়ন হবে না। তাই আগে দরিদ্র বিমোচন করতে হবে। বাংলাদেশে উন্নয়ন করতে হলে আগে বৈষম্য কমাতে হবে। বাঙালি লড়াই করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেলেও এখনো সভ্য জাতি হয়ে উটেনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর উল্লেখ্য বিষয় হলো সাম্য, মৈত্রী ও বৈষম্য এই তিনটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটা মানতে পারলেই আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পৌছাতে পারব। আর বাংলাদেশে সাহসী মানুষ হয়ে বাচঁতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সম্পর্কে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর মতো সাহসী হতে হবে। তাহলেই দেশে উন্নয়ন করা যাবে। বাংলাদেশের স্বাধীন করার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ সাল থেকে স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধু সবসময় অর্থনীতির মুক্তির কথা বলতেন। স্বাধীনতা আর মুক্তি এক নয় কারন মুক্তির জন্য উন্নয়ন দরকার। বঙ্গবন্ধুকে চিনতে ও জানতে হলে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষনটি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু শুধু প্রবৃদ্ধি চায়নি তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নও চেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন সীমাহীন পর্বতের মতো।
তিনি আরো বলেন, আমরা উন্নয়নে অনেক এগিয়েছি তবে আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হবে। উন্নয়নের মধ্যে আমি চাই সামগ্রিক উন্নয়ন মানবিক উন্নয়ন সবার আগে করতে হবে। আমাদের শিক্ষার উন্নয়ন করতে হবে, রাজনৈতিক উন্নয়ন করতে হবে ও অর্থনীতির উন্নয়ন করতে হবে। ২০৪১ সালে আমরা উন্নয়শীল রাষ্ট্রে পৌছাতে হলে আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মতো দেশ পরিচালনা করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো চিন্তাধারা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে গড়া রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। আমাদের দেশে পুঁজিবাদী মনোভাবের কারণে বর্তমানে বৈষম্য বাড়ছে এটা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। তাহলেই দেশে উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেছিলো বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের সবসময় একটি কথা বেশী বলতেন বাংলার মাটি নরম হতে পারে কিন্ত বৈশাখে বাংলার মাটি শক্ত।
অধ্যাপক ড. সৈকত আরা হোসেন বলেন, মহান মুক্তিযোদ্ধে পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মুক্তিযোদ্ধের সময় আমি তখন ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলাম। পাকিস্তানিদের ভয়ে আমি আমার মায়ের সাথে রাতে ভয়ে থাকতে হতো। পরবর্তীতে আমি আমার নানা বাড়িতে আশ্রয় নেই।
তবে সেই সময় মুক্তিযোদ্ধেরকে আমার নানা বাড়ি থেকে তাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছি। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত সুদক্ষ একজন ব্যক্তি। বঙ্গবন্ধুর যার সাথেই দেখা হতো তিনি বলতেন আমাকে একটা ভালো লোক দেন আমি যেন বাংলাদেশকে একটা ভালো রাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে পারি। আমরা সবাই যেন বঙ্গবন্ধুর মতো আদর্শে বড় হই। তিনি আরো বলেন, একটা দেশের ধনীব্যক্তির চেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি খুব বেশী প্রয়োজন।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ধারায় জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিচালনায় আজকের বাংলাদেশ অনেক উন্নত হয়েছে। বর্তমানে আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশে অবস্হান করছি। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরো জানতে হলে সকল শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনী সম্পর্কে গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সিলেট এম. সি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, সিলেট সরকারী মহিলা কলেজ ও মদন মোহন কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিকবৃন্দ, উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, সিলেট বিভাগীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ।