লোভাছড়া পাথর কোয়ারী পরিদর্শন করলেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব কামাল হোসেন
কানাইঘাট প্রতিনিধি: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লোভাছড়া পাথর কোয়ারী পরিদর্শন করেছেন মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিষয়ক সচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সিলেটের সকল পাথর কোয়ারী পরিদর্শন করতে শুক্রবার তিনদিনের সফরে তিনি সিলেট আসেন। অাজ রবিবার কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারী সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন সচিব কামাল হোসেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লোভারমুখ সুরমা নদীর ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে সচিব কামাল হোসেন লোভাছড়া পাথর কোয়ারী এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখেন।
এ সময় সচিব কামাল হোসেনকে অভ্যর্থনা জানান লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। পাশাপাশি হাজারো পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা লোভাছড়া কোয়ারী খুলে দেয়া সহ কোয়ারীতে আটকে পড়া পাথর উচ্চ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পরিবহনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য সচিবের দৃষ্টি আকর্ষন করে বিক্ষোভ করেন। প্রায় ১ ঘন্টা কোয়ারী এলাকায় সচিব কামাল হোসেন অবস্থান কালে পাথর ব্যবসায়ীরা তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি কোন কথা বলেননি।
কোয়ারির পরিদর্শন শেষে বিকেল সাড়ে ৪টায় সিলেট সার্কিট হাউসে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সাথে কথা বলেন, সচিব কামাল হোসেন। সাক্ষাৎকালে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, পাথর ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন, তমিজ উদ্দিন, মদরিছ আলী ও রীটকারী পাথর ব্যবসায়ীদের আইনজীবি এড. মঈনুল হক বুলবুল কোয়ারীতে আটকে পড়া পাথর পরিবহনের অনুমতি রয়েছে সংক্রান্তে কাগজপত্র ও রীট মামলার কপি উপস্থাপন করেন এবং পাথর পরিবহনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য সচিব কামাল হোসেনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। এ সময় তিনি লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ীদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সিলেট অঞ্চলের পাথর কোয়ারীগুলো সচল করা যায় কি না এবং কি অবস্থায় সেটা দেখার জন্য আমি এখানে এসেছি। আপনাদের কথা শুনলাম কিভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায় এ নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে কথা বলবো। ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এতে সন্তোষ্ট প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব কামাল হোসেন আমাদেরকে যে আশ^াস দিয়েছেন এতে আমরা খুশি হয়েছি। আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা পাথর পরিবহন করতে পারব।
এদিকে মন্ত্রি পরিষদের সচিব কামাল হোসেন নৌপথে লোভাছড়া কোয়ারী এলাকা পরিদর্শনকালে পাথর কোয়ারী সচল সহ আটকে পড়া শত কোটি টাকার পাথর পরিবহনের সুযোগ করে দিতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা শতাধিক ছোট ছোট নৌকায় ব্যানার ফেস্টুন প্রদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের ¯েøাগান দিয়ে সচিবের দৃষ্টি আকর্ষন সহ তাঁর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সরব উপস্থিতি দেখে সবিচ কামাল হোসেন একপ্রকার বিব্রত হয়ে সেখানে তাদের সাথে কোন কথা বলেননি।
তবে গণমাধ্যম কর্মীরা সচিবের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি সংক্ষেপে বলেন, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, জাফলং এবং লোভাছড়া পাথর কোয়ারী তিনি পরিদর্শন করে সবকিছু দেখেছেন। সার্বিক বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন। কিন্তু কোয়ারী খুলে দেয়া বা পাথর পরিবহনের সুযোগ দেয়া হবে কি না এ নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, সিলেটের বিভাগীয় কমিমশনার মশিউর রহমান (এনডিসি), জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম, সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আসলাম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান, কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ।
এদিকে লোভা কোয়ারী পরিদর্শনকালে সচিব কামাল হোসেনকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, লোভাছড়া পাথর কোয়ারী হচ্ছে দেশের প্রাচীণতম একটি পাথর কোয়ারী, লাখো শ্রমিকের কর্মসংস্থানের একমাত্র মাধ্যম এ কোয়ারি। তিনি কোয়ারীর কার্যক্রম সচল ও গত শুকনো মৌসুমে কোয়ারী থেকে উত্তোলনকৃত পাথর যাতে করে ব্যবসায়ীরা পরিবহন করতে পারেন এজন্য সচিব মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তখন সচিব কামাল হোসেন এ বিষয়ে আজ বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে আওয়ামীলীগ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে যেটা ভালো হয় সেটার সুব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ^াস প্রদান করেন।