সর্বশেষ

» কানাইঘাটে মাল্টা চাষে সফল প্রবাস ফেরত কৃষক মুহাম্মদ আলী

প্রকাশিত: ০৫. অক্টোবর. ২০২১ | মঙ্গলবার

নিজাম উদ্দিন, কানাইঘাটঃ কৃষক মুহাম্মদ আলী ছোটকাল থেকে বাবার সাথে কৃষি কাজে জড়িত ছিলেন। এরপর জীবনের তাগিদে তরুণ বয়সে পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে। সেখানে দীর্ঘ ৩৫টি বছর শ্রমিকের কাজ করে দেশে ফিরে আসেন ২০১৬ সালের দিকে। দেশে এসেই আবারো কৃষিকাজ শুরু করেন।গবাদি পশু পালনের পাশাপশি বাড়ির আশপাশে নানা ধরণের সবজিচাষ শুরু করেন মোহামামদ আলী। উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নজরে আসেন পরিশ্রমী প্রবাস ফেরত কৃষক মোহামাদ আলী।

কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীকে তার বাড়ির বিশাল উঠানে নানা জাতের উচ্চ ফলশীল মাল্টা গাছের বাগান করার পরামর্শ দিলে এতে মোহাম্মদ আলী রাজি হন। এরপর ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের রাজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে মাল্টাচাষ প্রদর্শনীর আওতায় কৃষি অফিসের তত্বাবাধনে মোহাম্মদ আলী তার বাড়ির উঠানে ২০ শতাংশ জমির উপর ৬০টি নানা উন্নত জাতের মাল্টাচারা রোপন করেন।

মোহাম্মদ আলীর পরিশ্রম আর কৃষি অফিসের তদারকিতে দু’বছরের মধ্যে চারা গুলো চোখ জুড়ানো এক মাল্টার বাগানে পরিনত হয়।

সরেজমিনে কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউপির চটি গ্রামের মৃত ইছরাক আলীরপুত্র মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাগানে ফলনশীল মাল্টার গাছ গুলো বড় হয়ে প্রতিটি গাছে অসংখ্য বড় সাইজের মাল্টা ধরে ঝুলে আছে। মাঝে মাঝে রয়েছে দু’একটি কমলার গাছ। কমলার গাছেও ঝুলে আছে কমলা।

কৃষক মুহাম্মদ আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, জীবনের সোনালী সময়টুকু প্রবাস কুয়েতে কাটিয়েছেন। দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে তেমন কিছু করতে পারেননি। দেশে চলে এসে ফের পুরানো পেশা কৃষি নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। ক্ষেতের জমিতে ধানচাষের পাশাপশি বসত বাড়ির আশপাশ এলাকায় সবজী বাগান, কলাবাগান, গবাদী পশুর খামার করেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে নিজের বাড়ির উঠানে মাল্টা বাগানকরে গত বছর প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। এবছর এ পযর্ন্ত ২৫ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন।

বাগানে আরো ২৫-৩০ হাজার টাকার মাল্টা রয়েছে। বিষ ও ফরমালিন মুক্ত অত্যান্ত সুস্বাদু মাল্টা তার বাগান থেকে অনেকে প্রতি কেজি ২ শত টাকা করে কিনে নিয়ে যান। পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনসহ পাড়া প্রতিবেশীকেও মাল্টা দিয়ে থাকেন। তিনি আরো জানান মাত্র ৫ বছর সময়ের ব্যবধানে আজ তার বাগানটি আশানুরুপ ফল দিচ্ছে। প্রতিটি মাল্টার গাছে ৫০-৬০ কেজি মাল্টা ধরে থাকে।

কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মোহাম্মদ আলী বলেন, মাল্টা চাষ অত্যান্ত লাভজনক কম পরিশ্রম অল্প পুজিতে বাগান করা যায়। ভবিষ্যতে তিনি তার মাল্টা বাগানের পরিধি আরো বাড়ানোসহ কৃষি অফিসের পরামর্শে নানা জাতের সবজি, ফলজ বাগান করতে চান। এজন্য ব্যাংক থেকে পুজি দেওয়া হলে কৃষিকাজের মাধ্যমে অর্থ নৈতিক ভাবে স্বাবলম্ভী হওয়া যায় এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান তিনি।

মোহাম্মদ আলীর মালটা বাগান পরিদর্শন করে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা হায়দার আলী বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মাল্টা চাষের প্রদর্শনী করা হয়েছিল। এসব প্রর্দশনীর মধ্যে কৃষক মুহাম্মদ আলীর অক্লান্ত পরিশ্রমে তার বাগানটিতে বর্তমানে শত শত মাল্টা ধরেছে। একজন সফল কৃষক হিসাবে মোহাম্মদ আলী ভবিষ্যতে আরো বিভিন্ন ধরনের বাগান করতে চাইলে আমরা সার্বিক ভাবে তাকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবো।

মোহাম্মদ আলীর পাশে কৃষি পরামর্শ দিয়ে সব সময় আমাদের সদর ইউনিয়নের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা আলিম উদ্দিন ছিলেন। যার কারণে মাল্টা বাগানটি পরিপূর্ণ তা লাভ করেছে। যে কোন কৃষি পরামর্শ দেওয়ার জন্য কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা কৃষকের পাশে রয়েছেন।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

February 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728