সর্বশেষ

» মামলা করে  বিপাকে ছালমা

প্রকাশিত: ০৯. আগস্ট. ২০২২ | মঙ্গলবার

চেম্বার ডেস্ক:: 

শহরতলির খাদিম নগরের পীরেরচক এলাকার সনজিদ আলীর মেয়ে ছালমা বেগম (৩১)। সিলেট ল কলেজের এলএলবি ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী তিনি। মাস চারেক আগে তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছালমার নামে দেওয়া হয় একের পর এক অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ পোস্ট। পারিবারিক পূর্বশত্রুতার জের ধরে ছালমার প্রতিবেশিরাই ফেসবুকে ছড়িয়ে দিতে থাকেন ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ বিভিন্ন তথ্য।

মানসিকভাবে মুষড়ে পড়েন ছালমা। বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই নারী। কিন্তু তবুও থেমে নেই চক্রান্ত। ছালমার অভিযোগ, তদন্তকারী কর্মকর্তার অসহযোগিতার কারণে উচ্চ আদালতে জামিন পেয়েছেন আসামিরা।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১১ মার্চ বিকেলে ছালমা বেগমের স্বজনেরা ছালমাকে ফোন দিয়ে জানান, তারই প্রতিবেশি দুবাই প্রবাসী হাবিবুর রহমান আশুক তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি এবং জলন্ত বারুত নামে আরেকটি ফেসবুক আইডি থেকে অশ্লীল ছবি ব্যবহার করে ছালমার নামে খারাপ এবং কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা লিখে শেয়ার দিয়েছেন।

আশুকের প্রতিবেশি হওয়ার সুবাদে ঘটনাটি জানাজানি হয় ছালমার পরিচিতজনদের মাঝেও। বিভিন্নজন ছালমাকে কল দিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ছালমা। স্বজনদের সাথে পরামর্শ করে ২৫ মার্চ শাহপরাণ থানায় একটি মামলা (নম্বর-৩৫/৮৯) অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় থানার এসআই সারোয়ার হোসেন ভূঁইয়ার উপর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল পোস্ট শেয়ার দেওয়ার ঘটনায় ২০২১ সালে দু’বার শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ছালমা বেগম। সর্বশেষ মামলা দায়েরের পরও নিশ্চিন্ত হতে পারেননি ছালমা। কারণ মামলায় ৫টি ধারা থাকার কথা থাকলেও, ছিলো ৩টি ধারা।

এ ব্যাপারে ২৯ মার্চ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনারের কাছে একটি সংশোধনের আবেদন করেন ছালমা। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে পুলিশ। শাহপরান থানার সহকারী কমিশনার রূপক কুমার সাহা তদন্ত প্রতিবেদনে মামলা দায়েরকালীন সময়ে ধারা বসানোয় অসঙ্গতির বিষয়টি তুলে ধরে এসআই সারোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে ধারা সংশোধনের পরামর্শ দেন। এর প্রেক্ষিতে ১০ এপ্রিল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে ধারা সংশোধনের আবেদন জানান এসআই সারোয়ার।

ছালমার অভিযোগ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সারোয়ার ইচ্ছেকৃতভাবে মামলার বিভিন্ন ধারা পরিবর্তন করেছিলেন। যাতে মামলার আসামিরা সহজেই জামিন পেয়ে যান। কারণ এসআই সারোয়ার হোসেন ভূঁইয়া ছালমার পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিপক্ষের একটি মামলারও তদন্ত করছিলেন। এসআই সারোয়ারের আচরণে ছালমার সন্দেহ হয়, তদন্ত সুষ্ঠু হবে কি না?  মামলার স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য এসএমপি কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানান ছালমা বেগম। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।

ছালমা বেগম বলেন, আমার দায়েরকৃত মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামিদের সাথে মিলিত হয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সারোয়ার ধারা বাদ দিয়ে দেন। আমি পরবর্তীতে পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন ধারা সংশোধনের আবেদন জানাই। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত করে মামলার ধারায় অসংগতির ব্যাপারটি দেখতে পায় পুলিশ। পরবর্তীতে আমার সন্দেহ হওয়ায় মামলাটি এসআই সারোয়ারের কাছ থেকে পরিবর্তন করে অন্য সংস্থায় প্রেরণের জন্য আবেদন করি। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। আমি এখনো দুশ্চিন্তায় রাত কাটাই। এখনো প্রতিপক্ষের লোকজন আমার ও পরিবারের ক্ষতিসাধনের চেষ্ট করছে। এজন্য তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930