সর্বশেষ

» কানাইঘাটে বন্য হরিণ জবাই করে খাওয়া নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৫. জুন. ২০২২ | রবিবার

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাটে একটি বন্য হরিণ ধরে জবাই করে খাওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকে গত শনিবার বিকেলে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মুলাগুল বনাঞ্চল এলাকা থেকে লোকালয়ে চলে আসা একটি হরিণ ধরে পা বাঁধা অবস্থায় ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। ফেসবুকে হরিণের পা বাঁধা ছবি ও ভিডিও ছেড়ে দেয়ার পর এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত রয়েছেন এবং হরিণ জবাই করে খেয়েছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান অনেকে।
এসব আইডির পোস্টে উল্লেখ করা হয়, বাজেখেল গ্রামের গ্রামপুলিশ মাসুক, নুরের ছেলে সুহেল, মৃত তমিজ উদ্দিনে ছেলে ইফজাল বন্য হরিণটি বাজেখেল গ্রাম থেকে স্বীকার করে লাঠিতে পা ঝুলিয়ে নিয়ে জনৈক রুবেলের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর সাবেক চেয়ারম্যান শমসের আলমের পরামর্শে ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিনের নির্দেশে স্বীকার করা হরিণটি গত শুক্রবার রাতে তমিজ চেয়ারম্যানের বাড়িতে জবাই করে খাওয়া হয়েছে এমন পোস্ট বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জির দৃষ্টিগোচর হলে তিনি শনিবার বিকেলে তাৎক্ষণিক উপজেলা বিট কর্মকর্তা জয়নুল ইসলামকে আটক হরিণটি উদ্ধার করে বনাঞ্চলে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশের পাশাপাশি যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বিট কর্মকর্তা জয়নুল ইসলাম বলেন, তিনি সরেজমিনে গিয়ে হরিণটি শিকার করে আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। যারা এর সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। তবে কোথায় হরিণটি জবাই করে খাওয়া হয়েছে সেই বিষয়টি উদ্ঘাটনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে বন্য আইনে আনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কিছু কতিপয় ফেসবুক আইডি থেকে হরিণ শিকার নিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এলাকার লোকজনের কাছ থেকে শুনেছেন গত শুক্রবার একটি হরিণ লোকালয়ে আসলে বাজেখেল গ্রামের কিছু লোকজন হরিণটি শিকার করেন। এরপর জেনেছি হরিণটি বাঁধা অবস্থা ছুটে চলে গিয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যান শমসের আলম গত নির্বাচনে আমার পক্ষে কাজ করায় হরিণ শিকার নিয়ে কতিপয় লোকজন ফেসবুকে আমার ও উনার বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। তার বাড়িতে হরিণ জবাই করে খাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দিনের বেলা লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের নয়াখান গ্রামে একটি বন্য হরিণ এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে তাড়া করলে হরিণটি বাজেখেল গ্রামের বাগানের ঘাট সংলগ্ন এলাকায় লোভা নদীর পারে চলে আসলে গ্রামের কিছু লোকজন হরিণটিকে আটক করে। একপর্যায়ে আটক হরিণটি গ্রাম পুলিশ মাসুকের জিম্মায় দেয়া হলে স্থানীয় কতিপয় লোকজন হরিণটি মাসুকের কাছ থেকে নিয়ে জবাই করার চেষ্টা করলে লোকজন জড়ো হলে সেখানে জবাই না করে সাবেক চেয়ারম্যান শমসের আলমের বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানেও লোকজন জানাজানির কারনে হরিণটি জবাই করতে না পেরে ঐদিন রাতে শমসের আলম ইউপি চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিনের স্পিডবোটে করে হরিণটি তার বাড়িতে নেয়া হয়।
স্থানীয় বন বিভাগের গার্ড হরিণটি আটকের পর বাজেখেল গ্রামে গিয়ে দেখার পরও ছেড়ে দেয়ার কোন ব্যবস্থা করেননি বলে অনেকে জানিয়েছেন।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930