সর্বশেষ

» ইসরাইলের ২৮টি স্টেশনে সিরিজ সাইবার হামলা ইরানের

প্রকাশিত: ৩১. জুলাই. ২০২০ | শুক্রবার

চেম্বার ডেস্ক:: ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে শীতল সাইবার যুদ্ধ আরো তীব্র হচ্ছে। ইসরাইলের অন্তত ২৮টি রেলস্টেশনে সিরিজ সাইবার হামলার দাবি করেছে ইরানের একটি হ্যাকারগোষ্ঠী। ১৪  জুলাইয়ের পর এসব হামলা চালানো হয়। শুক্রবার (৩১ জুলাই) তুর্কি গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

হামলাকারী সাইবার এভেঞ্জার্স গ্রুপের এক বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তত দেড়শ ইসরাইলি রেল স্থাপনা লক্ষ্যে করে তারা হামলা চালায়। তার মধ্যে ২৮টি ট্রেন এবং সাবওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম তারা ব্যহত করতে সমর্থন হয় বলে দাবি করা হয়।

ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।

সবচেয়ে বড় সাইবার হামলাটি চালানো  হয় ১৪ জুলাই রাত ১টা ২০ মিনিটে। গেলো জানুয়ারিতে বাগদাদ বিমান বন্দরের কাছে ঠিক ওই সময়েই মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের বিপ্লবী গার্ডের আল কুদস শাখার কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি। সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ এবং তার বীরত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে কমান্ডারের নিহত হওয়ার সময়টাকে হামলার জন্য বেছে নেয় তারা।

১৪ জুলাই শুরু হওয়া অব্যাহত সাইবার হামলা চলে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। টানা ১০ দিন হামলা চালানোর পর ওই দফায় কার্যক্রম স্থগিত করে সাইবার এভেঞ্জার্স। তবে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ভয়াবহ হামলা এখনো হয়নি। এমন সতর্কতা, দু’পক্ষের মধ্যে সাইবার যুদ্ধকে আরো উস্কে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাইবার এভেঞ্জার্স একটি ম্যাপ প্রকাশ করেছে। যেখানে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের হামলার শিকার স্টেশনগুলো। তারমধ্যে, জেরুজালেম, তেল আবিব ইউনিভার্সিটি এবং বেন গুরিয়ন স্টেশনও রয়েছে।

হামলার ৬ দিনেও ওইসব স্টেশন সচল করা যায়নি। সাইবার এভেঞ্জার্সের দাবি, হামলায় ইসরাইলি রেলস্টেশনের নিয়ন্ত্রণ সিস্টেমের যন্ত্রপাতি ও স্থাপনার ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে।

হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে গ্রুপটি জানায়, আমরা চাইলে হাজারো ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে দিতে পারি। এটা বুঝানোর জন্যই হামলা চালানো হয়েছে।

গেলো মাসে ইসরাইলের বিদ্যুৎ সরবাহ ব্যবস্থায় ভয়াবহ বিভ্রাট চালানোরও দাবি করে সাইবার এভেঞ্জার্স। তবে, সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসবের কোনো প্রমাণ নেই।

গেলো কয়েক মাস আগে ইসরাইলের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্তের জন্য ইরানি শেডো সাইবার গ্রুপের সম্পৃক্ততা ছিল বলে অভিযোগ উঠে। তবে এ বিষয়ে ইসরাইল বা শেডো গ্রুপ আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকারের প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করেনি।

এপ্রিলে ইসরাইলের বেশ কয়েকটি বর্জ্যজল শোধনাগার, পানির পাম্প এবং সুয়ারেজ সিস্টেমে ব্যাপকভাবে হামলার পরই সাইবার আক্রমণের বিষয়টি গতি পায়।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্স গোপনের জন্য বিশেষ উপায়ে পানির পাম্পের কম্পিউটারের সফটওয়ার হ্যাক করে ওই হামলা চালানো হয়েছে।

গেলো মে মাসে ইরানের দক্ষিঞ্চলীয় এলাকার একটি বন্দর সাইবার হামলার শিকার হয়। বেশ  কয়েকদিন ব্যহত হয় বন্দরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। হামলার জন্য বিদেশি শক্তিকে দায়ী করা হয়। তবে ইসরাইলের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

অতিসম্প্রতি ইরানে বেশ কয়েকটি রহস্যময় অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। ষড়যন্ত্র করে এসব  হামলা হতে পারে বলে গুঞ্জন  উঠে। কিন্তু এসব গুঞ্জন উড়িয়ে দেয় ইরান সরকার।

গেলো মাসে নাতানজ পরমাণু ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার বিষয়টিও কৌতুহলের জন্ম দেয়। ইরানি কর্তৃপক্ষ জানায় তারা কারণ খুঁজে পেয়েছে। বিস্তারিত কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ।

ধারণা করা হচ্ছে সবশেষ সাইবার আক্রমণ বৈরী দুই দেশের মধ্যে চলা শীতল সাইবার হামলার অংশ।

ইরানি গণমাধ্যমকর্মী এবং সাইবার যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ হুসাইন এসতাহদাদি এক টুইট বার্তায় ইসরাইলের সাইবার নিরাপত্তার নিয়ে ধোঁয়াশা প্রকাশ করেন। বলেন, তাদের রেলস্টেশনে এতোগুলো হামলা হলা তারা টেরই পেলো না! কোন দুনিয়ার থাকে তারা?

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

April 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930