সর্বশেষ

» যা করেছি আইন মেনে নিরপেক্ষভাবে করেছি: আব্দুল জব্বার জলিল

প্রকাশিত: ১৫. ডিসেম্বর. ২০২১ | বুধবার

চেম্বার ডেস্ক:: 
সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জব্বার জলিল বলেছেন, নির্বাচন পরিচালনা করতে গিয়ে যা করেছি আইন মেনে নিরপেক্ষভাবে করেছি।এরপরও যদি কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ হন তবে তাদের আপিল করার সুযোগ আছে প্রয়োজনে আইনেরও আশ্রয় নিতে পারবেন। সে সুযোগ আছে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আক্রমন কাম্য হতে পারে না।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) নগরীর জেলরোডস্থ চেম্বারের কনফারেন্স রুমে বিকেল ৩টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা করেন।

মো. আব্দুল জব্বার জলিল লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২২-২০২৩ সাল মেয়াদের পরিচালক ও প্রেসিডিয়াম নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু এবং নিরপক্ষেভাবে হয়েছে।
প্রেসিডিয়াম নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করে বোর্ড। চূড়ান্ত ভোটার তালিক প্রস্তুত, ভোটারদের সর্বশেষ ট্রেড লাইসেন্স এবং আয়কর বিবরণীর সত্যতা যাচাই-বাছাই, সংবিধির বিভিন্ন ধারাকে সামনে রেখে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ইত্যাদি কার্যক্রম নিরপেক্ষতার নিরিখে সম্পন্ন করা হয়। যার ফলে পরিচালক পদে প্রার্থী হওয়া সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ১ জন এবং সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের ৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এ বিষয়ে তারা আপিল করলে আপিলেও বোর্ডের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। এই ৫ প্রার্থী তাদের প্রার্থিতার বৈধতার স্বপক্ষে কোনো আইনগত ভিত্তি উপস্থাপন করতে পারেননি। অথচ এখন একটি পক্ষ প্রার্থীতা বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন বোর্ডের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অপব্যাখ্যা দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আব্দুল জব্বার জলিল আরও জানান, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির অতীত রেওয়াজ অনুযায়ী- যেসব প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র আগে জমা দিবেন তাদের ব্যালট ক্রমিক নম্বরও সেভাবে দেওয়া হয়। এবারের নির্বাচনে উভয় প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীগণ যেভাবে ক্রমিকানুসারে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের ব্যালট ক্রমিক নম্বরও সেভাবে প্রদান করা হয়েছে। এখানে নির্বাচন বোর্ডের কোনো হাত নেই। অথচ এই বিষয়টি নিয়েও গুজব ছড়িয়ে নির্বাচন বোর্ডের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ তোলা হচ্ছে।

আব্দুল জব্বার জলিল সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও গণনায় সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে নির্বাচন বোর্ড। বিষয়টি উভয় প্যানেলের শীর্ষস্থানীয় এজেন্ট ও প্রার্থীগণ প্রত্যক্ষ করেছেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কমিশন হতে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স সংগ্রহ করা হয়। নির্বাচনে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচনী কাজে অভিজ্ঞ সরকারি-বেসরকারি কলেজের শিক্ষক এবং সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীদের নিয়োজিত করা হয়। ১১ নভেম্বর সকাল ৯ টা হতে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এসোসিয়েট শ্রেণির ভোটগ্রহণ নির্ধারিত সময়ে শেষ হলেও অর্ডিনারি শ্রেণির ভোটগ্রহণ বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে শেষ হয়। পরে প্রার্থী ও এজেন্টদের সামনেই ব্যালট বাক্স খুলে ভোট গণনা শুরু হয়। এসোসিয়েট শ্রেণির প্রার্থী ও এজেন্টরা পৃথক দুটি টেবিলে একইসাথে ভোট গণনায় সম্মত হলে রাত ১০ টার আগেই এসোসিয়েট শ্রেণির ফলাফল প্রকাশ করতে সক্ষম হই। তবে অর্ডিনারি শ্রেণির ভোট ও প্রার্থী বেশি হওয়ায় এবং পৃথক ৩টি টেবিলে একসাথে ভোট গণনার বিষয়ে কয়েকজন প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের আপত্তির কারণে ওই শ্রেণির ফলাফল প্রকাশ করতে রাত ৩টা বেজে যায়। কিন্তু ওই বিষয়টি নিয়েও নির্বাচন বোর্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে।

এদিকে, নির্বাচনের তারিখ হতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রেসিডিয়াম গঠনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসাবে গত ১৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩ টায় প্রেসিডিয়াম গঠনের সময় নির্ধারণ করে নির্বাচন বোর্ড। এ লক্ষ্যে বিকাল সাড়ে ৩টায় নির্বাচিত পরিচালকদের নিয়ে কনফারেন্স রুমে সমবেত হন বোর্ডের সদস্যরা। এর আগে উভয় প্যানেল প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে তিনজন করে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্রার্থীগণ তাদের প্রতিপক্ষ প্যানেলের দুইজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা সম্পর্কে লিখিতভাবে আপত্তি জানান। বিষয়টি নিয়ে উভয় প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বয়োজেষ্ঠ্যরা সমঝোতার স্বার্থে সময় চাইলে নির্বাচন বোর্ড সময় প্রদান করে। এজন্যই সভার কার্যক্রমে বিলম্বিত হয়। এই বিলম্বের দায়ভার এখন নির্বাচন বোর্ডের উপর চাপানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল।

তিনি জানান, সংঘবিধির ১২ (বি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী- চেম্বারের প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের প্রত্যেককেই ভিন্ন শ্রেণি থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। কিন্তু সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মো. আব্দুর রহমান (জামিল) ও ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হুমায়ুন আহমদ দুজনে একই শ্রেণি (অর্ডিনারি) থেকে হওয়ার কারণে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে দুজন বলেন, তারা পৃথকভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, প্যানেল থেকে নয়। কিন্তু তারা নির্বাচনে পরিচালক পদে প্রার্থিতা প্যানেল হিসাবেই দাখিল করেছেন। তাই তাদের দাবিটি সংবিধি মোতাবেক না হওয়ায় এবং চেম্বার নির্বাচনকে আইনি জটিলতা থেকে রক্ষার স্বার্থে মো. আব্দুর রহমান (জামিল) ও হুমায়ুন আহমদের মনোনয়নপত্র বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন বোর্ড। এই সিদ্ধান্তের পরই সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের পরিচালকগণ সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যান। আইনানুযায়ী নির্বাচন বোর্ড পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করে এবং প্রেসিডেন্ট পদে তাহমিন আহমদ, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মো. আতিক হোসেন নির্বাচিত হন।

আব্দুল জব্বার জলিল দুঃখের সঙ্গে বলেন, সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের পরিচালকগণ এই আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের পূর্বেই নির্বাচনী বোর্ড সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান করছেন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। অথচ নির্বাচন বোর্ডের প্রত্যেকেই করোনাকালীন দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং সুনামের অধিকারী। চেম্বারের নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করতে বিগত ৩ মাস যাবত বোর্ডের সদস্যরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু আইনগত প্রতিবন্ধকতার কারণে দুইজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় নির্বাচন বোর্ডের সদস্যদের সকল অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে এবং চরম নেতিবাচক মন্তব্য করা হচ্ছে। মহান আল্লাহ রাব্বল আলামীন এর উত্তম বিচার করবেন। এ কথা বলে তিনি
কেঁদে ফেললেন। তিনি বলেন, আমি সারা জীবন সততাকে বুকে ধারণ করেছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমি এ আদর্শকে নিয়ে বাঁচতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের নির্বাচন বোর্ডের সদস্য অ্যাডভোকেট মিছবাউর রহমান আলম ও মো. সিরাজুল ইসলাম শামীম এবং সিলেটে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930